হিজাব নিয়ে ভারতের কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন করেছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। সংস্থাটির সচিব মহম্মদ ফজলুর রহিমসহ তিনজন সোমবার সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন করেন।
চলতি মাসের শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাবে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে কর্ণাটক হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে বিভিন্ন পিটিশন খারিজ করে আদালত।
হাইকোর্ট সে সময় বলে, হিজাব পরা ইসলামের অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন নয়।
অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পবিত্র কোরআন ও ইসলামিক আইনের ভুল ব্যাখ্যার ওপরে ভিত্তি করে ওই রায় দেয়া হয়েছে।
আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে পবিত্র কোরআনের ৩১ ও ৫৯ তম আয়াতের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘কোরআন ও মহম্মদের শিক্ষায় বলা হয়েছে, ঘনিষ্ঠ পরিবার ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের সামনে নারীদের মাথা ও ঘাড় ঢেকে রাখা উচিত। মুসলিম নারীরা জীবনের বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন ধরনের কাপড় ব্যবহার করে থাকেন নিজেদের মাথা ও শরীর ঢেকে রাখতে। আধুনিক সময়েও হিজাবে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাছাড়া বিষয়টি হিজাব নিয়ে নয়, তা ব্যবহারের পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে।’
আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘কর্ণাটক হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তার প্রভাব শুধু রাজ্য নয় গোটা দেশেই পড়তে পারে। হিজাবকে বাধ্যতামূলক নয় বলে ঘোষণা করেছে আদালত, যা সঠিক নয়।’
ঘটনার শুরু ৩১ ডিসেম্বর কর্ণাটকের উদুপি জেলায়। সেখানকার একটি সরকারি কলেজে সেদিন পোশাক নিয়ে বিধিনিষেধ দেয়া হয়। এতে মুসলিম ছাত্রীরা ক্লাস চলাকালে হিজাব পরে থাকতে পারবেন না বলে জানানো হয়। তবে ক্লাস শেষে বা শুরুর আগে পর্দা করতে আপত্তি নেই বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ওই দিনই প্রতিবাদ করেন ছয় শিক্ষার্থী। সময়ের সঙ্গে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। হিজাব পরার পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ অনেক জায়গাতেই সহিংস রূপ নেয়। হিজাব নিয়ে বিতর্কে তৈরি হওয়া উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে।
এই ইস্যু গড়ায় আদালতে। অন্তর্বর্তী নির্দেশে কর্ণাটক হাইকোর্ট জানায়, যতদিন পর্যন্ত হিজাবসংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তি না হচ্ছে, ততদিন স্কুল ও কলেজে যেকোনো ধরনের ধর্মীয় পোশাক পরা যাবে না। একই সঙ্গে রাজ্যটির স্কুল ও কলেজ খুলে দিতে বলা হয়।
এক দফা শুনানির পর সেটি হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো হয়।